ইউএসএআইডি বন্ধের উদ্যোগে ইলন মাস্ক, সমর্থনে ট্রাম্প

অনলাইন ডেক্স: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল সরকারের আকার কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধের কাজ চলছে।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক আলাপচারিতায় টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক এ কথা জানান। ওই আলোচনায় রিপাবলিকান সেনেটর জনি আর্নস্ট ও মাইক লি এবং ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান মনোনয়নপ্রত্যাশী বিবেক রামাস্বামী উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনার শুরুতেই মাস্ক বলেন,
আমরা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) বন্ধের জন্য কাজ করছি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে বলেন,
“এটি (ইউএসএআইডি) মেরামতের অবস্থায়ও নেই।”

ইউএসএআইডি বিশ্বের বৃহত্তম দাতা সংস্থা হিসেবে পরিচিত। ২০২৩ অর্থবছরে এই সংস্থার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে ৭,২০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রদান করে। এর মধ্যে নারী স্বাস্থ্য, বিশুদ্ধ পানি, এইচআইভি/এইডস চিকিৎসা, জ্বালানি নিরাপত্তা ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সংস্থাটি বৈশ্বিক মানবিক সাহায্যের ৪২% অর্থায়ন করেছে। বর্তমানে সংস্থাটির অধীনে ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী কাজ করছেন।

তবে, সপ্তাহান্তে ইউএসএআইডির ওয়েবসাইট অফলাইনে ছিল এবং রোববারও অনেক ব্যবহারকারী এতে প্রবেশ করতে পারেননি বলে জানা গেছে।

ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ট্রাম্প ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা হ্রাসের ঘোষণা দেন। তার এই নীতি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

মাস্ক আরও দাবি করেন, মার্কিন বাজেট ঘাটতি ১ ট্রিলিয়ন ডলার কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কিভাবে এটি করা হবে, সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

এদিকে, মার্কিন ট্রেজারি ব্যবস্থাপনায় মাস্কের হস্তক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সিনেটর পিটার ওয়েলশ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন,ট্রেজারির অর্থ ছাড় প্রক্রিয়ায় মাস্কের প্রবেশাধিকার কেন দেওয়া হলো, যেখানে কোটি কোটি মার্কিন নাগরিকের ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্য সংরক্ষিত?

এ নিয়ে ডেমোক্র্যাটরা সমালোচনা করলেও ট্রাম্প মাস্কের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন,
“মাস্ক খরচ কমাতে দক্ষ। মাঝে মাঝে আমাদের মতভেদ হয়, তবে তিনি খুব বুদ্ধিমান এবং ফেডারেল বাজেটের ব্যয় কমাতে কঠোর পরিশ্রম করছেন।

ইউএসএআইডি বন্ধের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহায়তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই উদ্যোগ সমর্থন করলেও, বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *