বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান আর নেই

অনলাইন ডেক্স: বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিক, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান আর নেই। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান জানান, ভোরে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি । দ্রুত স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আব্দুল্লাহ আল নোমানের জানাজা আজ বাদ আসর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের সকল নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণকে জানাজায় অংশগ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।

নোমানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে, বিশেষ করে চট্টগ্রামে, শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

রাজনৈতিক জীবনে  তিনি ৭৯ বছর বয়সে ইন্তেকাল করা আব্দুল্লাহ আল নোমান সহধর্মিণী, এক পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তিনি ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর তিনি দুইবার মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন—১৯৯১ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও ২০০১ সালে খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালিন করেন।

ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দিয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয়। পরে মেননপন্থি ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে শ্রমিক রাজনীতিতে যুক্ত হন এবং পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি ভাসানীপন্থি ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের পর যুদ্ধ শেষে ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের আহ্বানে বিএনপিতে যোগ দেন এবং চট্টগ্রামে দলের শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

আজ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান বক্তা থাকার কথা ছিল নোমানের। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে সেই সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী নোমানের মৃত্যু বিএনপি ও জাতীয় রাজনীতিতে এক অপূরণীয় শূন্যতা সৃষ্টি করল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *