নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশে অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যই আমদানি নির্ভর। ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে দেশীয় উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার শ্লথ থাকায় আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। যার কারণে বাড়তি চাহিদা, মজুদ সংকট কিংবা আমদানি কমে গেলে দেশে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। গত দেড় দশকে পেঁয়াজ, চিনি, ভোজ্যতেল, গম, ডাল, আলু সহ বিভিন্ন পণ্যে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
তবে বিগত সময়ে দেশে ভোগ্যপণ্যের দামে অস্বাভাবিক বৃদ্ধিজনিত সংকটের সময়ে ত্রাতা হিসেবে এগিয়ে আসে দেশের শিল্প গ্রুপ গুলো। এর মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। বিশ্বভাজারে দাম বাড়লেও কিভাবে এস আলম দেশের সংকটকালীন সময়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করতো, কিভাবে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতো সেই গল্পই শুনাবো আজ।
এস আলম গ্রুপ গত এক দশকে দেশের আপদকালীন সময়ে খাদ্যপণ্য সরবরাহে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। ভোজ্যতেল, চিনি, গম ছাড়াও পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল জাতীয় পণ্য দ্রুত আমদানি ও সরবরাহের মাধ্যমে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষত ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে, চার বছরে, এস আলম গ্রুপ দ্রুত চিনি, ভোজ্যতেল, গমসহ তিনটি প্রধান ভোগ্যপণ্য আমদানি করে ন্যায্যমূল্যে দেশব্যাপী সরবরাহ করেছে। এর ফলে সংকটময় পরিস্থিতি অনেকাংশে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে ভোগ্যপণ্যের সংকট সৃষ্টি হওয়ার পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ কাজ করে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আন্তর্জাতিক বাজারে আমদানির উৎস দেশের মূল্যবৃদ্ধি, রফতানি বন্ধ বা রফতানিতে কড়াকড়ি আরোপ, এবং দেশের অভ্যন্তরে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ঘাটতি। এ ধরনের সমস্যার কারণে ভোক্তারা পণ্যের সঠিক দাম ও প্রাপ্যতায় ভোগান্তির শিকার হন।
এস আলম গ্রুপ এমন সংকটকালে বরাবরই মুনাফার চিন্তা বাদ দিয়ে ভোক্তাদের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দিয়েছে। তারা দ্রুততম সময়ে বিকল্প উৎস থেকে আমদানি করে পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। এই উদ্যোগের ফলে সংকটময় পরিস্থিতিতে ভোগ্যপণ্যের দাম দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে। যেমন, ২০১৬ সালে চিনির বাজারে অস্থিরতা তৈরি হলে, এস আলম গ্রুপ চট্টগ্রামের ১০টি পয়েন্টে এক মাসব্যাপী ন্যায্যমূল্যে (প্রতি কেজি ৪৫ টাকা) চিনি বিক্রির উদ্যোগ নেয়। এর ফলে সাধারণ মানুষের জন্য চিনির প্রাপ্যতা সহজ হয়ে যায়।
রমজানের মতো বিভিন্ন সংকটকালীন সময়ে এস আলম গ্রুপ একই রকম উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা ন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ, ডাল, ছোলা এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। দেশের ভোগ্যপণ্যের সংকট নিরসনে এ ধরনের পদক্ষেপ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তাদের এই কার্যক্রম শুধু যে বাজার স্থিতিশীল করেছে তা নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজতর করেছে।
এস আলম গ্রুপের এ ধরনের উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, দায়িত্বশীল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা কেবল মুনাফার জন্য কাজ করে না, বরং জাতীয় সংকট নিরসনে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে।








