অনলাইন ডেক্স:মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার আতিয়াবাগ চা-বাগানে সমান মজুরির দাবিতে চলা শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। পাশাপাশি বাগানটি খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) একটি সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আকিজ টি কোম্পানি পরিচালিত আতিয়াবাগ চা-বাগানের পাশাপাশি সোনারুপা ও ধামাই নামে আরও দুটি চা-বাগান রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সমঝোতা বৈঠকটি ধামাই বাগানের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আকিজ টি কোম্পানির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) কাজল মাহমুদ, আতিয়াবাগ বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম জমাদ্দার, শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ভোজন মুন্ডা, এবং পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম।
ইউপি চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম জানান, বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে। পৌষসংক্রান্তি উৎসবের পর বাগানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের দাবিদাওয়া পূরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। শ্রমিক নেতারা এ আশ্বাস মেনে নেন এবং ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
আতিয়াবাগ চা-বাগানে ২৪২ জন স্থায়ী এবং ১৩০ জন অস্থায়ী শ্রমিক কাজ করেন। সরকার ২০২৪ সাল থেকে শ্রমিকদের মজুরি প্রতিবছর ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার ঘোষণা দিলেও অস্থায়ী শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়নি। বর্তমানে স্থায়ী শ্রমিকরা দৈনিক ১৭৭ দশমিক ৪৫ টাকা মজুরি পেলেও অস্থায়ী শ্রমিকরা পান মাত্র ১৬৯ টাকা।
এছাড়া, পরপর তিন বছর ১ লাখ ৮০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হলে চা-বাগান ‘এ’ শ্রেণিতে উন্নীত করার নিয়ম থাকলেও, গড়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার কেজি উৎপাদনের পরও আতিয়াবাগকে ‘এ’ শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়নি। এর ফলে শ্রমিকরা প্রত্যাশিত মজুরি বৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এসব দাবিতে গত ৩ জানুয়ারি থেকে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন।
ধর্মঘটের জেরে কর্তৃপক্ষ বাগানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে, যা পুরো কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি করে। অবশেষে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সমঝোতা বৈঠকে সমস্যা সাময়িকভাবে সমাধান হয়।
সমান মজুরি ও বাগানকে ‘এ’ শ্রেণিতে উন্নীত করার দাবিতে শ্রমিকরা আশাবাদী যে কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। বাগানের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালুর পাশাপাশি শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ জরুরি।








