বাণিজ্য ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইসলামী ব্যাংক নির্বাহী কমিটি সম্প্রতি ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠান ‘ট্রু ফেব্রিকস লিমিটেড’-কে ২৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংকটির স্থিতিশীলতা ও নৈতিকতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ঋণ অনুমোদনের বিস্তারিত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইসলামী ব্যাংক ‘ট্রু ফেব্রিকস লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ২৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। …
ইসলামী ব্যাংকের নতুন ঋণ কেলেঙ্কারি: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ২৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন

বাণিজ্য ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইসলামী ব্যাংক নির্বাহী কমিটি সম্প্রতি ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠান ‘ট্রু ফেব্রিকস লিমিটেড’-কে ২৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। এ নিয়ে ব্যাংকটির স্থিতিশীলতা ও নৈতিকতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
ঋণ অনুমোদনের বিস্তারিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইসলামী ব্যাংক ‘ট্রু ফেব্রিকস লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ২৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে। ব্যাংকের নির্বাহী কমিটি সম্প্রতি এই ঋণ অনুমোদন করে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনুমোদন সংক্রান্ত নথিতে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য উঠে এসেছে।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে ছিলো এমন কথা শুনা গেলেও, এখন তো এস আলম গ্রুপ নেই। তারপরও কেনো এই অনিয়ম তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামী ব্যাংক এখনও পুরোপুরি স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করা অর্থে ব্যাংক পরিচালিত হচ্ছে, এবং গ্রাহকের আমানতের চাহিদাও পুরোপুরি পূরণ করতে পারছে না। এরই মধ্যে নতুন করে অনিয়ম শুরু হওয়া হতাশাজনক। সংশ্লিষ্টরা দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায় প্রথমে ২২৫ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব করা হলেও, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল তা বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকা করেন। প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপির রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও এই ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. আব্দুল জলিল আগে ইসলামী ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং অবসরের পর ট্রু ফেব্রিকস লিমিটেডের ব্যাংকিং পরামর্শক হিসেবে যোগ দেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
- তিনি ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডি হিসেবে নিজের মেয়ের জামাতা মো. মশিউর রহমানকে নিয়োগ দিয়েছেন।
- ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকে মেয়ের জামাতার মামা ফায়জুল কবিরকে জেনারেল ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
- আবুল খায়র ও ড. আলতাফ উদ্দীন নামে দুই আত্মীয়কে বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সিনিয়র অফিসার এবং হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
দৈনন্দিন কার্যক্রমে অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ
পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে শুধু বৈঠকে অংশ নেওয়ার অনুমতি থাকলেও, আব্দুল জলিল পৃথক চেম্বার ব্যবহার করছেন। ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে তার অতিরিক্ত হস্তক্ষেপে কর্মকর্তারা অসন্তুষ্ট। পদোন্নতি, বদলি, অডিট রিপোর্ট প্রণয়ন এবং ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়ায়ও তিনি প্রভাব খাটাচ্ছেন।
ব্যাংকের স্থিতিশীলতা নিয়ে শঙ্কা
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসলামী ব্যাংক এখনও স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার করা অর্থে ব্যাংক পরিচালিত হচ্ছে এবং গ্রাহকের আমানতের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় নতুন করে অনিয়ম শুরু হওয়া হতাশাজনক।
তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকের অনিয়মের তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২৬ ডিসেম্বর ব্যাংক পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের টিম। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত শেষে মো. আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টদের মতামত
বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মনিরুল মওলা এবং চেয়ারম্যান মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
Subscribe to Our Newsletter
Keep in touch with our news & offers










